শাহবাগে প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনে পুলিশের লাঠিচার্জ, আহত ১২০ জন

পিপলস নিউজ রিপোর্ট: রাজধানীর শাহবাগে আন্দোলনরত প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের ওপর লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ। এতে অন্তত ১২০ জন শিক্ষক আহত হয়েছেন।

শনিবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ পরিদর্শক মো. ফারুক। তিনি জানান, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২০ জন শিক্ষক আহত হয়ে হাসপাতালে এসেছেন। তাদের অনেকেই চিকিৎসা শেষে চলে গেছেন, আবার বেশ কয়েকজনের চিকিৎসা চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে ১০ম গ্রেডে বেতনসহ তিন দফা দাবিতে ‘কলম বিসর্জন কর্মসূচি’ পালন করতে শাহবাগে অবস্থান নিতে গেলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ ও লাঠিচার্জ করে। এতে শিক্ষকরা ছত্রভঙ্গ হয়ে পড়েন।

এর আগে দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন শেষে ‘কলম বিসর্জন কর্মসূচি’র ঘোষণা দেন শিক্ষকরা। এরপর তারা তিন দফা দাবিতে শাহবাগের দিকে যাত্রা শুরু করলে পুলিশ বাধা দেয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। পরে অনেক শিক্ষক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আশ্রয় নেন।

শিক্ষকদের দাবিগুলো হলো—
১️. সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ,
২️. ১০ ও ১৬ বছর চাকরি পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সংক্রান্ত জটিলতার স্থায়ী সমাধান, এবং
৩️. শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতির নিশ্চয়তা প্রদান।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি এবং শিক্ষক সংখ্যা প্রায় ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০ম এবং ১৩তম থেকে ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে সহকারী শিক্ষকরা বঞ্চিত হওয়ায় তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

এদিকে প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকদের আরেক অংশ ‘প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ’-এর ব্যানারে একাদশ গ্রেডে বেতন, উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন ও শতভাগ পদোন্নতির দাবিতে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা দিয়েছে। তাদের দাবি মানা না হলে ২৩ ও ২৪ নভেম্বর অর্ধদিবস কর্মবিরতি, ২৫ ও ২৬ নভেম্বর পূর্ণদিবস কর্মবিরতি এবং ২৭ নভেম্বর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সামনে অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।

এ ছাড়া ১১ ডিসেম্বরের মধ্যে দাবি বাস্তবায়নে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে পরীক্ষা বর্জন ও আমরণ অনশন কর্মসূচি শুরু করারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *