পিপলস নিউজ রিপোর্ট: বাংলাদেশ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (বিআইইউ) শাখার নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল নোমান জয়কে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) সন্ধ্যায় সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর মান্ডা এলাকায় নিজ বাসার নিচে আড্ডারত অবস্থায় একদল শিক্ষার্থী তাকে আটক করে। পরে তাকে পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়।
আটক আবদুল্লাহ আল নোমান জয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক।
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৫ আগস্ট টিএসসি, শাহবাগ, ঢাকা মেডিকেল, শহীদ মিনারসহ বিভিন্ন স্থানে হকস্টিক, বাঁশ, লোহার রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রদের ওপর সভাপতি শুভ্র দেব গুহ এবং আবদুল্লাহ আল নোমান জয়ের নেতৃত্বে বিআইইউ শাখা ছাত্রলীগ হামলা চালায়। তারা খুনি, স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে শিক্ষার্থীদের ওপর অমানবিক নির্যাতন, হয়রানি, গুম ও হত্যার মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, মুগদার মান্ডা এলাকায় বাসা থেকে নিচে নেমে আড্ডা দিচ্ছিলেন জয়। এ সময় একদল শিক্ষার্থী তাকে আটক করে। পরে আশপাশের আরও শিক্ষার্থীরা এসে তাকে থানায় নিয়ে যেতে সহায়তা করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাসে থাকাকালীন জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক শিক্ষার্থীকে হয়রানি ও শারীরিকভাবে নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া ক্যাম্পাসের সামনে মাদক সেবন, শিক্ষক হয়রানি ও হেনস্তার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
তারা আরও জানান, ভিন্নমতের শিক্ষকদের ‘জামায়াত’ ট্যাগ দিয়ে পুলিশে দেওয়ার হুমকি এবং নানাভাবে হেনস্তা করতেন তিনি।
নুসরাত জাহান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, “মেয়ে দেখলে বুলিং করা, বিরক্ত করা, ফেসবুক আইডি খুঁজে হুমকি দেওয়া—এমন কোনো কাজ নেই, যা এই বেয়াদবটি করেনি।”
সাবেক শিক্ষার্থী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “জয় আমাকে পূজার পোস্ট অ্যাপ্রুভ না করায় গাড়িতে তুলে মারধর করে। তার ফেসবুক পোস্ট নিয়ে একাধিকবার ক্যান্টিনে নিয়ে হুমকি দিয়েছে। ওয়াসিক এবং আফনানকে দিয়ে আমাকে মারার চেষ্টা করেছে।”
আইন বিভাগের ৫০তম ব্যাচের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থান শুরুর পর আমাদের এক ছোট বোন যখন বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে প্রতিবাদী পোস্টার হাতে দাঁড়ায়, তখন জয় এসে সন্ত্রাসী কায়দায় সেই পোস্টার কেড়ে নেয় এবং হেনস্তা করে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে বহু সাধারণ শিক্ষার্থীদের চায়ের দাওয়াত দিয়ে অমানবিক নির্যাতন চালায়।”
তিনি আরও বলেন, “সে তার পড়াশোনার ক্ষতি করে অসংখ্য ভুয়া আইডি খুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অশালীন লেখালেখি করত, বেগম খালেদা জিয়া ও আল্লামা দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ছবি বিকৃতভাবে উপস্থাপন করত। মেয়েদের নামে ভুয়া আইডি খুলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের চরিত্র হননের চেষ্টা করত এবং বাক-স্বাধীনতা ও মুক্তচিন্তায় হস্তক্ষেপ করত। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের আইনের আওতায় আনার হুমকি দিত এবং একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল।”
হুমায়ূন কবির নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, “পাপ একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করলে আল্লাহর তরফ থেকে হেদায়েত আসা বন্ধ হয়ে যায়।”
এমআই/