স্টোকসের ড্র প্রস্তাব ফিরিয়ে সেঞ্চুরিতে জবাব, ওভালে সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে গড়াল ভারত-ইংল্যান্ড লড়াই

পিপলস নিউজ রিপোর্ট: ওল্ড ট্রাফোর্ডে টেস্টের শেষ দিনে এক অদ্ভুত ও নাটকীয় দৃশ্যের জন্ম দিলেন ভারতীয় দুই ব্যাটার রবীন্দ্র জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর। ম্যান্ডেটরি শেষ ঘণ্টার খেলা শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকস করমর্দনের মাধ্যমে ড্র মেনে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। তবে জবাবে স্টোকসকে ফিরিয়ে দেন দুই ব্যাটার। কারণ, দুজনই তখন শতকের দ্বারপ্রান্তে।

জয়ের কোনো সম্ভাবনা না থাকলেও ব্যক্তিগত মাইলফলক স্পর্শ করতেই অনিয়মিত স্পিনারদের মোকাবিলা করতে নামেন জাদেজা-সুন্দর। দ্রুতই সফল হন তাঁরা। প্রথমে জাদেজা, এরপর সুন্দর সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন হ্যারি ব্রুক ও জো রুটের বিরুদ্ধে। জাদেজা ছক্কা মেরে তুলে নেন নিজের পঞ্চম টেস্ট সেঞ্চুরি, আর সুন্দর ১৫ বল পরই পূর্ণ করেন তাঁর প্রথম শতক।

এরপর দুই দল করমর্দনের মাধ্যমে ড্র মেনে নিলে নির্ধারিত হলো সিরিজের ভাগ্য গড়াবে শেষ টেস্টে। চার ম্যাচ শেষে ইংল্যান্ড এগিয়ে আছে ২-১ ব্যবধানে। ওভালে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্ট শুরু হবে ৩১ জুলাই।

শেষ দিনে ভারতের শুরুটা ছিল চাপের মধ্যেই। আগের দিন শূন্য রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে ভয়াবহ শঙ্কায় পড়ে তারা। তবে সেখান থেকে তৃতীয় উইকেটে ১৮৮ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন শুবমান গিল ও লোকেশ রাহুল। অধিনায়ক গিল তুলে নেন সিরিজে নিজের চতুর্থ সেঞ্চুরি, করেন ১০৩ রান। অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে চার সেঞ্চুরির বিশ্ব রেকর্ডে গিলের নাম উঠে যায় স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ও সুনীল গাভাস্কারের পাশে।

রাহুল অবশ্য ভাগ্যহীন ছিলেন, ৯০ রানে এলবিডব্লিউ হন স্টোকসের বলেই। গিল ফিরে যান ২২২ রানে দলের চতুর্থ উইকেট হিসেবে। তখনও ভারত পিছিয়ে ছিল ৮৯ রানে।

এরপরই দৃশ্যপটে আসেন জাদেজা ও ওয়াশিংটন সুন্দর। চতুর্থ দিন বিকেলের শুরু হওয়া সেই জুটি গড়ায় ২০৩ রানে। শেষ পর্যন্ত ভারত ম্যাচ শেষ করে ৪২৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে। ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংসের চেয়ে এগিয়ে যায় ১১৪ রানে।

শেষ ঘন্টায় স্টোকস যখন ড্র’র প্রস্তাব দেন, ভারত তখন ৭৫ রানে এগিয়ে। তবে জাদেজা (১৮৫ বলে ১০৭) ও সুন্দর (২০৬ বলে ১০১) ব্যক্তিগত অর্জনকে অগ্রাধিকার দিয়ে খেলতে থাকেন। তাদের এই অনমনীয় মানসিকতাই শেষ পর্যন্ত ভারতকে সিরিজে টিকিয়ে রাখল।

ওল্ড ট্রাফোর্ডের সূর্য ডুবলেও ভারতের টিকে থাকার আলো জ্বলে রইল ওভাল পর্যন্ত। এখন নজর ৩১ জুলাইয়ের দিকে—সিরিজ নির্ধারণী সেই মহারণে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *