তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার উপরে, তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি

ভারী বর্ষণ ও উজানের পাহাড়ি ঢলে আবারও উত্তাল হয়ে উঠেছে তিস্তা নদী। নীলফামারী জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত এ নদীর পানি বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

রোববার (৫সেপ্টেম্বর)সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের দোয়ানীতে তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার নিচে ছিল। ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে সন্ধ্যা ৬টায় সেখানে ৮৫ সেন্টিমিটার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়।

ওই পয়েন্টে তিস্তার বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ১৫ মিটার। সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ৫১ দশমিক ৪৩ মিটার, আর সন্ধ্যায় বেড়ে দাঁড়ায় ৫২ দশমিক ২৮ মিটারে। পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তিস্তার ডান তীরের বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে বাঁশের পাইলিং ও বালির বস্তা ফেলে জরুরি মেরামত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পাউবো।

তিস্তার পানি বৃদ্ধিতে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ি, টেপাখড়িবাড়ি, গয়াবাড়ি, খালিশাচাপানী ও ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের অন্তত ১৫টি গ্রাম এবং চরাঞ্চলের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেক ঘরবাড়ি ও রোপা আমন ক্ষেত এখন পানিতে তলিয়ে গেছে।

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ খান বলেন, “দুপুরের পর থেকেই তিস্তার পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিমধ্যে বোল্ডারের চর, খোকার চর, খাড়াপাড়া ও ফ্লাটপাড়াসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়েছে।”

টেপাখড়িবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম জানান, “তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিস্তীর্ণ এলাকার আমন ক্ষেত ডুবে গেছে। অনেক বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে।”

পাউবো ডালিয়া ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ভারী বর্ষণ ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে। সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৪৩ সেন্টিমিটার নিচে থাকলেও সন্ধ্যায় তা বিপৎসীমার ১৩ সেন্টিমিটার ওপরে ওঠে। পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে কালীগঞ্জ এলাকার প্রধান বাঁধে ভাঙন দেখা দেয়, যা মেরামতের কাজ চলছে।

তিনি আরও বলেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ব্যারাজের সব কটি (৪৪টি) জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। তিস্তা তীরবর্তী এলাকায় রেড অ্যালার্ট জারি করে সন্ধ্যায় মাইকিং করা হয়েছে।” রাত ৮টার দিকে নদীর পানি বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল বলে তিনি জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *