পিপলস নিউজ রিপোর্ট: খাগড়াছড়ি জেলার গুইমারা উপজেলায় সহিংসতা ও দুষ্কৃতকারীদের হামলায় তিনজন পাহাড়ি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন মেজরসহ অন্তত ১৩ সেনাসদস্য, গুইমারা থানার ওসিসহ তিনজন পুলিশ সদস্য এবং আরও অনেকে।
রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরের আগে উপজেলার রামসু বাজার এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সরকারি বিভিন্ন অফিস, দোকান ও বসতঘরে অগ্নিসংযোগের খবর পাওয়া গেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছোড়ে।
এ ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। রোববার রাতে জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সল হাসান স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে জানানো হয়, জড়িতদের দ্রুত তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বিবৃতিতে বলা হয়, “কোনো অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না।” একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধৈর্য ধারণপূর্বক শান্ত থাকার আহ্বান জানানো হয়।
স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, রামসু বাজারের মুখে অবরোধের সমর্থনে সড়কে গাছের গুঁড়িতে আগুন দিয়ে পিকেটিং চলছিল। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সরে যেতে বললে এক পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। পরে অবরোধকারীরা রামসু বাজারের সমাজসেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, মহিলাবিষয়ক কর্মকর্তার কার্যালয়সহ বেশ কিছু অফিস, দোকান, বসতঘর ও মোটরসাইকেলে অগ্নিসংযোগ করেন।
গুইমারা থানার ওসি এনামুল হক চৌধুরী বলেন, “পরিস্থিতি অনেকটা আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। আতঙ্কিত না হয়ে লোকজনকে ১৪৪ ধারা মেনে চলতে বলা হয়েছে।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখারুল ইসলাম ও পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। জেলা প্রশাসক বলেন, “আমি এসপিসহ ঘটনাস্থলে অবস্থান করছি। আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি। ঘটনায় হতাহতও ঘটেছে।”
গত ২৩ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালায় এক স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। পরদিন ভুক্তভোগীর বাবা অজ্ঞাত তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশ সন্দেহভাজন যুবক শয়ন শীলকে গ্রেপ্তার করলেও বাকি দুজনকে আটকের দাবিতে ‘জুম্ম ছাত্র-জনতা’র ব্যানারে সড়ক অবরোধের ডাক দেওয়া হয়।
এর আগে শনিবার (২৭ সেপ্টেম্বর) খাগড়াছড়ি শহরে অবরোধকে কেন্দ্র করে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ২৫ জন আহত হন। তখনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিরাপত্তার স্বার্থে এর আগেই খাগড়াছড়ি সদর ও গুইমারায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন এবং বিজিবি মোতায়েন করা হয়।