পিপলস নিউজ রিপোর্ট: বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে শুরু হয়েছে।
আজ বুধবার (২৭ আগস্ট) বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন ট্রাইব্যুনাল-২–এ আজ সূচনা বক্তব্য দেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। এরপর ট্রাইব্যুনালে প্রদর্শিত হয় আবু সাঈদকে গুলি করার দুটি ভিডিও। এ সময় আদালতে উপস্থিত আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন ভিডিও দেখে বারবার চোখের পানি মুছছিলেন।
প্রসিকিউশনের আবেদনে আগামীকাল থেকে এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হবে।এর আগে গত ৩০ জুলাই প্রসিকিউশনের পক্ষ থেকে অভিযোগ গঠনের আবেদন করা হয়। অপরদিকে আসামি পক্ষ অব্যাহতি চান। ৬ আগস্ট ট্রাইব্যুনাল অভিযোগ গঠন করে আজ সূচনা বক্তব্যের দিন ধার্য করে।
এই মামলায় মোট ৩০ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে গ্রেপ্তার ৬ জনকে আজ আদালতে হাজির করা হয়। তারা হলেন—বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামসাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান রাসেলরেজিস্ট্রার কার্যালয়ের চুক্তিভিত্তিক সাবেক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজপুলিশের সাবেক এএসআই আমির হোসেনসাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ
গত বছরের ১৬ জুলাই, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ। তিনি ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন।
নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। এরই ধারাবাহিকতায় আন্দোলন আরও বেগবান হয় এবং গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশত্যাগে বাধ্য হন।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে আওয়ামী লীগ সরকার, তার দলীয় ক্যাডার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি অংশের বিরুদ্ধে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ ওঠে। এই অভিযোগের বিচার এখন দুটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলছে।